
স্টাফ রিপোর্টার:
কুমিল্লা-১১ নাঙ্গলকোট একটি স্বতন্ত্র সংসদীয় নির্বাচনী এলাকা ছিল । ২০০৮ সালের নির্বাচনের পূর্বে আাসন পুনর্বিন্যাসের কবলে পড়ে কুমিল্লা জেলার ১২টি সংসদীয় এলাকা ১১টিতে রূপান্তর হয়। নির্বাচনী এলাকার আয়তন, ভোটার সংখ্যার বিবেচনায় সবচেয়ে ছোট আসনটি বিলুপ্ত হওয়ার কথা। সেই অনুযায়ী কুমিল্লা-০৭(চান্দিনা) বিলুপ্ত হওয়ার কথা থাকলেও অজ্ঞাতকারণে বিলুপ্ত হয়েছে কুমিল্লা-০৯ (সদর দক্ষিন)। যাহা আয়তন ও ভোটার সংখ্যায় একটি বড় আসন। কুমিল্লা-০৯(সদর দক্ষিন) বিলুপ্ত হয়ে এর ০৬টি ইউনিয়ন কুমিল্লা-০৮(বরুড়া) এর সাথে এবং বাকী ০৬টি ইউনিয়ন নাঙ্গলকোট (সাবেক কুমিল্লা-১১) এর সাথে সংযুক্ত করে কুমিল্লা-১০ সংসদীয় আসন হয়ে ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৪ইং সালের নির্বাচনের পূর্বে নাঙ্গলকোটের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, সমাজ সেবক সচেতন নাগরিক সমাজ ও রাজনীতিবিদ দলমত নির্বিশেষে সবাই একত্রে সভা-সেমিনার, সেম্পোজিয়াম, মানব বন্ধন করে এবং নির্বাচন কমিশনে নিজেদের মতামত ব্যক্ত করে নাঙ্গলকোটের স্বতন্ত্র নির্বাচনী এলাকার দাবীতে একাত্নতা ও যৌক্তিকতা তুলে ধরেন। নাঙ্গলকোটের সাথে সদর দক্ষিনের একভূত হওয়া যে অযৌক্তিক তা যথাযথ তথ্য-উপাত্ত দিয়ে প্রমান করা হয়। যাহার প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন ২০১৩ সালের ৭ই ফেব্রুয়ারী একটি খসড়া গেজেট প্রকাশ করে। তাহাতে নাঙ্গলকোটকে একটি স্বতন্ত্র নির্বাচনী এলাকা ঘোষনা করা হয়। পরবর্তীতে অজ্ঞাত ও অদৃশ্য কারনে নাঙ্গলকোটকে স্বতন্ত্র নির্বাচনী এলাকা না করে ২০০৮সালের নির্বাচনী এলাকার পুনর্বিন্যাস বাদ দিয়ে সর্বস্তরের জনসাধারনের দাবীকে অগ্রাহ্য করে, নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সদর দক্ষিনের ১২টি ইউনিয়ন ও লালমাই উপজেলার ০৮টি ও লাকসামের ০১টি ইউনিয়নকে নাঙ্গলকোটের সাথে যুক্ত করে বিশাল নির্বাচনী এলাকা কুমিল্লা-১০ আসনের পূর্নাঙ্গ গেজেট প্রকাশ করে। অথচ ভৌগলিকভাবে নাঙ্গলকোটের সাথে লালমাই ও সদর দক্ষিন উপজেলার উল্লেখযোগ্য কোন সংযোগ সীমানা নেই। বৃহৎ সীমানা বাদ দিয়ে অতি সামান্য অংশের সাথে সংযুক্ত করার ফলে এই নির্বাচনী এলাকার দৈর্ঘ্য ৬০কি.মি. লম্বা হয়। ফলে কুমিল্লা-১০ নির্বাচনী এলাকা জেলার বৃহৎ নির্বাচনী এলাকায় পরিনত হয়। সাধারন জনগন জনপ্রতিনিধির সেবা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং জনদূর্ভোগও বাড়তে থাকে। ২০১৩ সালে নির্বাচন কমিশনের চুড়ান্ত গেজেটকে চ্যালেঞ্জ করে সাবেক সংসদ সদস্য মোঃ আবদুল গফুর ভূঁইয়া মহামান্য হাইকোর্টে একটি রীট পিটিশন দায়ের করেন। রীট পিটিশন নম্বর-৭১২৩/২০১৩। ২০১৭ইং সালে মহামান্য হাইকোট নাঙ্গলকোটকে একটি স্বতন্ত্র নির্বাচনী এলাকা বহাল রেখে রীটের রায় প্রদান করেন। এছাড়াও নাঙ্গলকোট, লালমাই ও সদর দক্ষিন উপজেলার বিক্ষুদ্ধ জনগন ও সচেতন ব্যক্তিবর্গ নির্বাচন কমিশনের এরূপ আসন বিন্যাসকে মেনে না নিয়ে ২০০৮সালের পূর্ববর্তী নাঙ্গলকোট ও সদর দক্ষিনের পৃথক আসন বিন্যাস চেয়ে বারবার নির্বাচন কমিশনে আবেদন অব্যাহত রেখেছেন । সর্বশেষ গত ১৯শে এপ্রিল নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে গণশুনানী করেন। শুনানীতে দলমত নির্বিশেষে সকল রাজনৈতিক ও সামাজিক সচেতন ব্যক্তিবর্গ নাঙ্গলকোট ও সদর দক্ষিন উপজেলাকে পৃথক করে আলাদা নির্বাচনী এলাকা করার পক্ষে মতামত প্রদান করেন। প্রয়োজনে নির্বাচনী এলাকার সাথে ভৌগলিক সংযোগ আছে এমন এলাকার সাথে আসন পুনর্বিন্যাসের পক্ষে মতামত প্রদান করেন। সুতরাং নাঙ্গলকোটকে পূর্বের ন্যায় আলাদা নির্বাচনী এলাকা ঘোষনা করার দাবী জোরদার হচ্ছে।