
চৈত্র মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে তাপমাত্রা ছিল অনেকটাই সহনীয়। এবার মাসটি তার নিজের ‘রূপ’ দেখাতে শুরু করেছে। রাজধানীতে প্রচণ্ড গরম পড়ছে। দেশের অন্যান্য স্থানেও একই অবস্থা। এতে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, দেশের ৪৯ জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রার তাপপ্রবাহ, যা অব্যাহত থাকবে আরও অন্তত তিন দিন।
আবহাওয়া অধিদপ্তর গতকাল রোববার সন্ধ্যা ছয়টায় পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে। সে অনুযায়ী ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের সব জেলায় এবং সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজারের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
যে মৃদু ও মাঝারি তাপপ্রবাহ বইছে, তা অব্যাহত থাকবে অন্তত আরও তিন দিন। দু-এক জায়গায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যেতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ বলেন, যে মৃদু ও মাঝারি তাপপ্রবাহ বইছে, তা অব্যাহত থাকবে অন্তত আরও তিন দিন। দু-এক জায়গায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যেতে পারে।
চৈত্রের প্রথম দুই সপ্তাহে তাপমাত্রা সহনীয় থাকার কারণ ছিল বৃষ্টি। কিন্তু বৃষ্টির রেশ কমে যাওয়ায় সপ্তাহখানেক ধরে প্রচণ্ড গরম পড়ছে। তবে তাপমাত্রা বাড়তে থাকলেও বাতাসে আর্দ্রতা কম। এ কারণে প্রচণ্ড গরমেও ঘাম কম হচ্ছে বলে জানান বজলুর রশীদ।
আবহাওয়া অধিদপ্তর ৪৪টি স্টেশনের আবহাওয়ার অবস্থা প্রতিদিন বিজ্ঞপ্তিতে তুলে ধরে। গতকাল সন্ধ্যায় দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় কোথাও বৃষ্টি হয়নি। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় একমাত্র চাঁদপুরে ১২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়।
রাজধানীতে গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল সকালে ঢাকার বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ২১ ভাগ আর সন্ধ্যা সাতটায় এর পরিমাণ ছিল ২৭ শতাংশ।
আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, এখন আর্দ্রতা কম থাকার কারণ এখন বায়ু উত্তর-পশ্চিমমুখী। দিন কয়েক পরে আসতে শুরু করবে দক্ষিণা হাওয়া। সেই বাতাস সাগর থেকে বয়ে নিয়ে আসবে প্রচুর আর্দ্রতা। এতে গরমের সঙ্গে ঘাম ঝরবে। এটা এ মাসের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য বলেই মনে করেন আবহাওয়াবিদেরা।
এপ্রিল মাস দেশের উষ্ণতম মাস। গত বছরের ২৪ এপ্রিল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায়, ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরদিন ২৫ এপ্রিল ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে।
এদিকে খুব তাড়াতাড়ি বৃষ্টির সম্ভাবনা কম বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদেরা। তাঁরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময় আবহাওয়ার গতিপ্রকৃতি পাল্টে গেছে। যেমন গত ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারিতে স্বাভাবিকের চেয়ে বৃষ্টি হয়েছে কম। আবার মার্চে গড় বৃষ্টির তুলনায় ৭৮ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়, ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ১ ডিগ্রি বাড়লেই মাঝারি থেকে পরিণত হবে তীব্র দাবদাহে।