
বর্তমান কিশোর তরুণ প্রজন্মের কাছে ‘ঈদ কার্ড’ এখন অতীত। একটা সময় ছিল ঈদ এলেই ছোট-বড় সবাই একে অন্যকে শুভেচ্ছা জানাত ঈদ কার্ড দিয়ে। শহর-গ্রাম সবখানেই ছিল ঈদ কার্ড দেওয়ার প্রচলন। তবে গেল কয়েক বছর ধরেই হঠাৎ করেই যেন হারিয়ে যেতে বসেছে ঈদ কার্ড দেওয়ার রেওয়াজ। শুধু অফিস আদালতে করপোরেট শুভেচ্ছা জানাতে এখন ঈদ কার্ডের কিছুটা ব্যবহার দেখা যায়। বছর পাঁচেক আগেও ঈদ এলে পাড়া-মহল্লার অলিতে-গলিতে ছোট ছোট দোকানে ঈদ কার্ড সাজিয়ে নিয়ে বসত এলাকার কিশোররা। বর্ণিল সব কার্ড। কার্ডগুলোতে লেখা থাকত ঈদের বিভিন্ন শুভেচ্ছা, কবিতা, ছড়া।
মজার মজার সব ছবির সঙ্গে লেখা থাকত আগামীর শুভেচ্ছাবার্তা। এখন আর এসব দেখা মেলায় ভার। বেসরকারি অফিসে কর্মরত রওনক ছোটবেলার স্মৃতি হাতড়ে জানালেন, ‘২০ বছর আগে যখন স্কুলে পড়তাম সব সময় বন্ধুদের ঈদ কার্ড দিতাম। বন্ধুরাও আমাকে ঈদ কার্ড দিত। কেউ না দিলে বন্ধুত্বই যেন ফিকে হয়ে যেত।’সময়ের পরিক্রমায় ঈদ কার্ড রূপান্তরিত হয়ে গ্রেটিংস নাম পেয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে তা নিমিষেই পৌঁছে যাচ্ছে অনেক মানুষের কাছে। অনুভূতি আদান-প্রদানের এই মাধ্যম এখন অনেকটাই যন্ত্রনির্ভর। তবে পুরোনো সেই কাগুজে মাধ্যমের স্মৃতির পাতা উল্টে তখনকার আবেগ, অনুভূতির কথা জানালেন স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কল্যাণ উপদেষ্টা রেহানা আক্তার। ষাট ছুঁই ছুঁই এ নারী নিজের ফেলে আসা শৈশব, কৈশোর আর যৌবনের ঈদগুলোয় ঈদ কার্ডের প্রতি দুর্বলতার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘এখন তো সবাই মোবাইলেই ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করে। মেসেজ বা গ্রেটিংস কার্ড পাঠিয়ে। কিন্তু এর মধ্যে প্রাণের যে একটা টান, মনের যে একটা টান বা ভালো লাগার যে একটা জায়গা। সেটা আমরা তেমনভাবে পাই না। বিশেষ করে আমি পাই না। কিন্তু যখন এসব ছিল না। আমাদের ছোটবেলায়, স্কুল-কলেজে পড়ায় সময় দেখেছি বিভিন্ন ভিউ কার্ড বাজারে। এত সুন্দর সুন্দর ঈদ কার্ড আসতো নায়ক-নায়িকা, পশুপাখি বিশেষ করে দৃশ্যাবলি, বিভিন্ন জায়গার ছবি, হাতে আঁকা সেগুলো থাকতো।’