রমজানের শেষ দশকে শবে কদর তালাশ

Spread the love

মোঃ মনিরুল ইসলাম, কুমিল্লা।

লাইলাতুল কদরের বিধান অবতীর্ণ হয়েছে মদিনা শরিফে। কেননা সুরা কদর মদিনা শরিফেই অবতীর্ণ হয়েছে। এটি মুসলমানদের জন্য অতিমূল্যবান রাত। কিছু রাত-দিন আছে, যা নবীর জন্য মূল্যবান। আবার কিছু রাত-দিন আছে, যা আমাদের জন্য মূল্যবান। এরমধ্যে বিশেষ কিছু ফজিলতপূর্ণ রাত আছে, তার মধ্যে সেরা রাত হলো লাইলাতুল কদর বা কদরের রজনী।
কদরের রজনীর পরিচিতি মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে নিজেই তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমি এটা (কোরআন) অবতীর্ণ করেছি মহিমান্বিত রজনীতে। আর মহিমান্বিত রজনী সম্পর্কে তুমি কী জানো? মহিমান্বিত রজনী হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। ওই রাত্রিতে ফেরেশতারা ও রুহ (জিবরাইল) অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজের জন্য তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে। শান্তিময় এই রাত ফজরের উদয় পর্যন্ত।’ (সুরা: কদর, আয়াত: ১-৫)

সাধারণত কদর রজনী শেষ দশকে হওয়াই বিশুদ্ধ অভিমত। হজরত আবু সালামা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবু সায়িদকে জিজ্ঞেস করেছি, সে আমার বন্ধু ছিল। তিনি বলেন, আমরা নবী করিম (সা.) এর সঙ্গে রমজানের মধ্য ১০ দিন ইতিকাফে ছিলাম। তিনি ২০ তারিখ সকালে বের হন এবং আমাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। ভাষণে বলেন, আমাকে কদরের রজনী দেখানো হয়েছিল, অতঃপর ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাই তোমরা তা শেষ ১০ দিনের বেজোড় রাতগুলোতে তালাশ করো। আমি নিজেকে মাটি ও পানিতে সিজদা করতে দেখেছি। তাই যারা রাসুলের সঙ্গে ইতিকাফে ছিল, তারা যেন ফিরে আসে। তখন আমরা ফিরে এসেছি। আমরা আকাশে কোনো মেঘ দেখিনি। হঠাৎ একরাতে মেঘ এলো, বৃষ্টি হলো, মসজিদের ছাদ ভেসে গেল। তা ছিল খেজুরগাছের ঢালের এবং নামাজ শুরু হলো, তখন আমি রাসুল (সা.) কে দেখেছি, তিনি পানি ও মাটিতে সিজদা করছেন। এমনকি তাঁর কপালে মাটির চিহ্ন ছিল।’ (বুখারি, হাদিস: ২০১৬)
আরো স্পষ্টভাবে বলতে গেলে, শেষ দশকের বিজোড় রাতের মধ্যে শেষের দিকের কয়েকটি রাতে শবেকদর হওয়ার সম্ভাবনা খুবই বেশি।

সহিহ বুখারির অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘হজরত উবাদা ইবনে সামিত (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘নবী করিম (সা.) আমাদের কদরের রজনীর খবর দেওয়ার জন্য বের হয়েছেন। তখন দুজন মুসলিম পরস্পর ঝগড়া করে। তিনি বলেন, আমি বের হলাম তোমাদের কদরের রজনীর খবর দেওয়ার জন্য। কিন্তু অমুক অমুক ঝগড়া করে, অতঃপর তা তুলে নেওয়া হয়েছে। তাতে তোমাদের জন্য কল্যাণ থাকতে পারে। তাই তোমরা শেষের পঞ্চম, সপ্তম ও নবম তারিখে তালাশ করো।’ (বুখারি, হাদিস: ২০২৩)
থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা রাসুল (সা.) এর সঙ্গে রোজা রেখেছি। তিনি আমাদের সঙ্গে নামাজ পড়েননি। যখন সাত দিন অবশিষ্ট রইল, তখন তিনি আমাদের সঙ্গে তারাবির নামাজ দ্বারা রাত্রি জাগরণ করেন। রাতের এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত। অতঃপর তিনি আর আমাদের সঙ্গে ষষ্ঠ দিন বাকি থাকা অবস্থায় রাত্রি জাগরণ করলেন না এবং আমাদের সঙ্গে পঞ্চম দিন তথা ২৩ রমজান রাত্রি জাগরণ করলেন ও তারাবি জামাতে আদায়ের মাধ্যমে রাতের অর্ধেক অতিবাহিত করেছিলেন। আমরা তাঁকে বললাম, যদি বাকি রাতও নফল হিসেবে আমাদের সঙ্গে কাটাতেন? তখন তিনি বলেন, যে ব্যক্তি ইমামের সঙ্গে রাত্রি জাগরণ করে, শেষ পর্যন্ত তাকে সারা রাত জাগরণের পুণ্য দেওয়া হবে। অতঃপর তিনি আমাদের সঙ্গে রাত্রি জাগরণ করেননি, মাত্র তিন দিন অবশিষ্ট রইল এবং আমাদের সঙ্গে তৃতীয় দিন (২৭ তারিখে) জামাতে নামাজ পড়লেন এবং তার পরিবারকেও জাগ্রত করলেন। এমনকি আমরা সাহরি খাওয়ার সময় চলে যাওয়ার আশঙ্কা করছিলাম। আমরা বলার পর তিনি সাহরি সমাপ্ত করেন।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৮০৬)

তবে যে তারিখেই হোক শবে কদর, সারকথা হলো লাইলাতুল কদর শেষ দশকেই বিদ্যমান। আর তা ২৭ তারিখে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আল্লাহ তা আমাদের থেকে গোপন রেখেছেন, যাতে মানুষ তা তালাশের জন্য চেষ্টা করে চেষ্টারও সওয়াব পায়। আর মানুষ যেন শুধু একটি রাতের ইবাদত না করে। কদরের রজনী বছরের সেরা রজনী। প্রত্যেক মুসলমানের উচিত, ওই রাতের মূল্যায়ন করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

E il quarto è un rosa (molto) caldo con una breitling replica finitura a lumaca, che sarà disponibile a maggio di quest'anno.

I really dig the silver dial variants – but I am also an entirely swiss replica rolex boring individual.