চৌদ্দগ্রামে আ’লীগ নেতার বিরুদ্ধে মসজিদের অর্থ আত্মসাত ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ

Spread the love

স্টাফ রিপোর্টারঃ-

বাবা সভাপতি, দুই ছেলে সহ-সভাপতি ও সেক্রেটারী
সংবাদ সম্মেলনে যুবলীগ কর্মী সুদি সোহাগ কর্তৃক সাংবাদিক লাঞ্চিত

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের ছোটখিল জামে মসজিদের বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি ও ইউনিয়ন আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইউসুফ আলী মজুমদার কর্তৃক অর্থ আত্মসাৎ, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিকার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে গ্রামবাসী। মঙ্গলবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গ্রামবাসীর পক্ষে মাওলানা আনোয়ার হোসেন ও জাফর আহাম্মদ। এদিকে সংবাদ সম্মেলনের শেষ পর্যায়ে ইউসুফ আলী মজুমদারের সহযোগী স্থানীয় যুবলীগ কর্মী সুদি সোহাগ হামলা চালিয়ে সাংবাদিকদের লাঞ্চিত করে।

লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়;মসজিদ হলো আল্লাহর ঘর।যেখানে মুসলিম জাতি আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় ইবাদাত-বন্দেগি করে। এর পবিত্রতা রক্ষা করা সকলের নৈতিক দায়িত্ব। অথচ এই মসজিদের বিভিন্ন অনুদান, বার্ষিক চাঁদা, এককালীন অনুদানসহ অর্থ আত্নসাৎ হয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। নিয়মনীতির কোন তোয়াক্কা না করে এককতন্ত্রে নিজের খুশিমতো চলে আসছে। মসজিদের বর্তমান কমিটির সভাপতি হাজী তাজুল ইসলাম মেম্বার। তার ছোট ছেলে মুন্সিরহাট ইউনিয়ন আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মসজিদ কমিটির সহ-সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। সেক্রেটারীর দায়িত্বে রয়েছেন সভাপতির বড় ছেলে খিরনশাল ইসলামিয়া ফাযিল মাদ্রাসার ইবতেদায়ী শিক্ষক মাওলানা মোস্তফা মজুমদার। এক ঘরের তিনজনই কমিটির শীর্ষপদ আকড়ে ধরে মসজিদ, মক্তব ও কবরস্থানকে তাদের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে রুপ দিয়ে যা ইচ্ছা তাই করে আসছে। মুলত: ইউসুফ আলী মজুমদার একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের মাধ্যমে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে। তারই অনুগত সোহাগ নামের একজনের মাধ্যমে মসজিদের ক্যাশ পরিচালনা করে আসছে। ক্যাশের দায়িত্ব পালনকারী সোহাগ এলাকায় সুদি সোহাগ হিসেবে পরিচিত। যাকে দিয়ে ইউসুফ আলী মজুমদার বার্ষিক চাঁদা, বিভিন্ন অনুদান ও জুমার দিনের কালেকশান ইত্যাদি অর্থ গচ্ছিত রাখার দায়িত্বে রাখায় সেই টাকা সোহাগ এলাকার বিভিন্ন মানুষের নিকট চড়া সুদের বিনিময়ে ঋন প্রদান করেন। যা এলাকাবাসীর জন্য অত্যন্ত কষ্টদায়ক ও মসজিদের পবিত্রতা ক্ষুন্ন করার শামিল। গ্রামের সাধারন মানুষ এবং মুসল্লীরা কখনোই তা মেনে নিতে পারে না। এছাড়াও ইউসুফ আলী মজুমদার মসজিদের সৌন্দর্য বিনষ্ট করার লক্ষে খাস জায়গা দখল করে মসজিদের সামনে পাকা দেয়াল স্থাপন করেন। যার ফলে রাস্তা থেকে মসজিদটি কোনভাবেই দেখা যায় না। বিগত ৮ বছর ধরে ইউসুফ আলী মজুমদার এককভাবে মসজিদ, মক্তব পরিচালনা করতে গিয়ে মসজিদের অর্থ গচ্ছিত রাখার জন্য কোন ধরনের যৌথ ব্যাংক একাউন্ট ছাড়াই সেই অর্থ তার নিজ হেফাজতে রেখে আসছে। এমতাবস্থায় মসজিদ ফান্ডের প্রায় ৬-৭ লক্ষ টাকার কোন হদিস পায়নি গ্রামবাসী। সে কোন সময়েই এলাকাবাসীর সাথে আলোচনা না করে এককভাবে তার খেয়াল খুশিমতো বার্ষিক চাঁদা নির্ধারন ও আদায় করে থাকে। সমাজের বিভিন্ন মানুষের অনুদানের অর্থে মসজিদে এয়ার কন্ডিশন লাগানো হলেও ইউসুফ আলীর অনুমতি ব্যতিত তা চালানো যায়না। অনুমতি ছাড়া এসি চালানোর দায়ে সমাজের অনেককেই ইউসুফ আলীর দ্বারা অপমান অপদস্থ হতে হয়েছে। মসজিদের বিষয়ে কেউ কোন কথা কিংবা পরামর্শ দিতে চাইলে মসজিদ থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া এবং মামলার আসামী করার হুমকিও প্রদান করে থাকে। এভাবে বিগত সময়ে সাধারন মুসল্লীরা চুপ থাকলেও গত ২-৩ মাস ধরে তাদের এসব অনিয়ম, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে থাকেন। ফলে গত রমজানের পূর্বে সুদি সোহাগকে অনুদান, বার্ষিক চাঁদা কালেকশানের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে এলাকার সকলের সম্মতিক্রমে সৈয়দ আহম্মদকে আদায় রশিদ বই হস্তান্তরের মাধ্যমে তারাবীর চাঁদা ও ২০২৩ সালের বার্ষিক চাঁদা কালেকশানের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। কিন্তু বছরের শুরুতেই সোহাগ প্রায় ২০-৩০টি পরিবারের চাঁদা কালেকশান করে নিজ হেফাজতে রেখে দেয়। সৈয়দ আহাম্মদকে কালেকশানের দায়িত্ব দেয়ার বিষয়টি ইউসুফ আলী মজুমদার কোনভাবে মেনে নিতে পারছে না। এমতাবস্থায় গত ঈদুল ফিতরের দিন গ্রামের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেম মাওলানা আনোয়ার হোসেনের প্রস্তাব উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে মসজিদ কমিটি পূর্ণগঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং ওইদিন আছরের নামাজের পরে গ্রামের সবাইকে নিয়ে নতুন কমিটি গঠনের লক্ষে মসজিদ প্রাঙ্গনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনার এক পর্যায়ে ইউসুফ আলী মজুমদার প্রস্তাব করেন, মসজিদ কমিটির সভাপতি হতে হলে ২০ লক্ষ টাকা ও সেক্রেটারী হতে হলে ১০ লক্ষ টাকা আমাকে দিতে হবে। অন্যথায় কেউ সভাপতি কিংবা সেক্রেটারী হওয়ার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। কিন্তু উপস্থিত সবাই তার এই প্রস্তাবের তীব্র প্রতিবাদ করেন। এক পর্যায়ে গ্রামবাসী নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে এগিয়ে গেলে ইউসুফ আলী মজুমদার সুদি সোহাগকে আবারো কমিটিতে রাখার জন্য চাপ দিলে সবাই তা নাকচ করে দেন। একপর্যায়ে সেখানে হাতাহাতি ও হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। ওই সময় ইউসুফ আলী মজুমদার গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে হুংকার দিয়ে বলেন, মসজিদ ফান্ডের টাকা দিয়েই সবার বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হবে এবং যারা বাড়াবাড়ি করছে তাদের সবাইকে জেলের ভাত খাওয়ানো হবে। এ ঘটনার পরও গ্রামবাসী একটি সুন্দর সমাধানের জন্য অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু ইউসুফ আলী গং তা না করে গত ৫ মে শুক্রবার জুমার নামাজের সময় পূর্বের কমিটি বহাল রাখার ঘোষণা দেন। এমতাবস্থায় সাধারন মুসল্লীরা এমন অন্যায় সিদ্ধান্ত, অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও পরিবারতন্ত্র কোনভাবেই মেনে নিতে পারছি না। আদর্শ সমাজ গঠনে ইউসুফ আলী মজুমদার গংয়ের বিচারও দাবি করেন গ্রামবাসী।

চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুভ রঞ্জন চাকমা সাংবাদিকদের বলেন;‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

E il quarto è un rosa (molto) caldo con una breitling replica finitura a lumaca, che sarà disponibile a maggio di quest'anno.

I really dig the silver dial variants – but I am also an entirely swiss replica rolex boring individual.